খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও আরএমওসহ ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে মেডিকেল কলেজের একদল শিক্ষার্থী তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ১৭ জন বহির্বিভাগের চিকিৎসক রয়েছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪০ জনের বেশি চিকিৎসক সেবা দিয়ে থাকেন। গড়ে প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় ওই ৪১ চিকিৎসক বুধবার হাসপাতালে আসেননি।
এতে চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রোগীরা। বিশেষ করে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি বেড়েছে। নির্দিষ্ট চিকিৎসককে না পেয়ে অনেক রোগী দূর-দূরান্ত থেকে এসে ফিরে গেছেন।
হাসাপাতালের কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার হাসপাতালের সম্মেলনকক্ষে মেডিকেল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে উপস্থিত হন কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক মোস্তফা কামাল। এরপর তিনি দুটি কাগজ ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের সামনে দেন। এক পর্যায়ে তাকে চাপ ও শিক্ষার্থীদের দিয়ে গণপিটুনি দেওয়ার হুমকি দিয়ে কাগজ দুটিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। যার একটি ছিল আক্তারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র ও অন্যটি ৪১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্চিত ঘোষণার।
ওই ৪১ চিকিৎসকের মধ্যে হাসপাতালের পরিচালক, সহকারী পরিচালক, আরএস, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ও রেজিস্ট্রার রয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ চিকিৎসক কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িতও নন।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য চিকিৎসক মোস্তফা কামালের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, জীবনে কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তারপরও তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তাকে ফোন দিয়ে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে যেতে বলেছেন।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালে যাবেন বলে জানান আক্তারুজ্জামান।
হাসপাতালের আরএমও সুমন রায় বলেন, “নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নিজেদের সম্মান যদি না থাকে, তাহলে চিকিৎসাসেবা দেব কিভাবে। এ কারণে বুধবার হাসপাতালে যায়নি। বৃহস্পতিবার যাব কি-না ভেবে দেখব।”
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মনজুরুল মুর্শিদ বলেন, “আমি বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হয়েছে।”