পরিশ্রম কখনও বৃথা যায় না, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে পরিশ্রমী খেলোয়াড় মুশি। একজন মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশ ক্রিকেটের কারিগর। কীভাবে বিপদগ্রস্থ দলের একাই হাল ধরে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে হয়, সেটাই যেন বার বার দেখিয়ে দেওয়া তার কাজ । তাছাড়া মুশফিক সবদিক থেকেই একজন ‘নিখুঁত’ মানুষ।
যেমন ভালো খেলতে পারেন, তেমনি ভদ্রতা বজায় রেখে চলেন সবার সঙ্গে। যেকারণে তাঁর সঙ্গে দলের কারোরই কোনোরকম মনোমালিন্য নেই। তাছাড়া দর্শক-সমর্থকদের কাছেও মুশফিকুর রহিম একটি আদর্শ চরিত্র।
অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতের গণমাধ্যমগুলোয় চোখ রাখলে ঠিক তার বিপরীত দৃশ্যটিই ধরা পড়বে। যেন কোনো এক অদ্ভুত ভারতীয়দের কাছে মুশফিক রীতিমতো একটি খলচরিত্রে পরিণত হয়েছেন।
এমনকি এই মুহূর্তে যদি ভারতের কয়েকটি প্রথম সারির গণমাধ্যমকে বিশ্বের সেরা ১০ জন অহংকারী ক্রিকেটারের তালিকা করতে বলা হয়, তবে নিঃসন্দেহে সেখানে মুশফিকের নামটি আপনি খুঁজে পাবেন।
এখন প্রশ্ন জাগে, কেন মুশফিকের প্রতি তাঁদের এতো আক্রোশ? মাশরাফি-তামিমদের কাছে ‘সুবোধ বালক’ হিসেবে পরিচিত মুশফিক কেনই বা দেশের সীমানা পার হতেই একজন ‘বেয়াদব’ বলে সম্বোধিত হবেন?
সম্প্রতি, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে রোববার মুশফিকের ইনিংসটি বদলে দেয় বাংলাদেশের ইনিংসের চিত্র। সেই অসাধারন ইনিংসের উপর ভর করেই কাঙ্খিত জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে তিনি বললেন, আপন পথে হেঁটেই তিনি হয়েছেন নায়ক। কৃতিত্ব দিলেন সতীর্থদেরও।
“আমি বিশালদেহী কেউ নই, সহজে বাউন্ডারি মারতে পারি না। আমি পোলার্ড বা রাসেল নই। নিজের শক্তির জায়গায় থাকার চেষ্টা করি। কন্ডিশনও আমাকে সুযোগ দেয়নি খুব বেশি বাউন্ডারি মারার।
তাই সময় নিয়েছি, আস্তে আস্তে রান বাড়িয়েছি। একটা প্রান্ত নিরাপদ রাখতেও হতো আমাকে। সেটা করেছি। রিয়াদ ভাইও সঙ্গ দিয়েছেন। আফিফ ও সাইফের ফিনিশিং টাচ ছিল দুর্দান্ত।”
সম্প্রতি কিছু স্পোর্টজউইকিসহ ভারতীয় মিডিয়া মুশফিকের এই বক্তব্যকে বিকৃতি করে মিথ্যা খবর ছাপিয়েছে। শুরুতেই তারা তাদের খবরের হেডলাইনে লেখেন,’ বাংলাদেশকে ম্যাচ জিতিয়ে রাসেল-পোলার্ডের সাথে নিজের তুলনা করে বসলেন মুশফিকুর রহিম’ ভারতীয় মিডিয়ার এমন বিকৃত মন মানসিকতায় প্রকাশ পায় তাদের মন মানসিকতা কত নিচু লেভেলের।
উল্লেখ্য, শ্রীলংকার বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন মুশফিকুর রহিম। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৮৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংস এবং দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁর ১২৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংসে ভর করেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।