প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। এর মাধ্যমে বিমান চলাচল, বিমান নির্মাণ, গবেষণা, মহাকাশ বিজ্ঞানচর্চা হবে। আমি আশা করি এর মাধ্যমে একদিন হয়তো বাংলাদেশে যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান ও হেলিকপ্টারও তৈরি করতে সক্ষম হবে, ইনশা আল্লাহ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিমানবাহিনীকে উন্নত ও আধুনিকায়নে ভবিষ্যতে আরো আধুনিক, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি কেনার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জাগো নিউজ।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল রোববার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমি যশোরে শীতকালীন ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২০’ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানবাহিনীতে শিগগিরই যুক্ত হবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্যাল সিস্টেম, মোবাইল গ্যাপ ফিলার রাডার এবং সর্বাধুনিক এয়ার ডিফেন্স রাডার। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্কানুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে আরো শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, এরই মধ্যে তার সরকার বিমানবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় আধুনিক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিমান, হেলিকপ্টার, রাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি সংযোজন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যাধুনিক পাঁচটি সি-১৩০-জে পরিবহন বিমান ক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি বিমান ইতোমধ্যে দেশে এসে পৌঁছেছে। বৈমানিকদের উন্নততর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে আরো ৭টি অত্যাধুনিক কে-৮ডব্লিউ জেট ট্রেইনার বিমান সংযোজন করা হয়েছে এবং অচিরেই যুক্ত হতে যাচ্ছে পিটি-৬ সিমুলেটর। এখন হয়তো কোভিড-১৯-এর কারণে আমরা বেশি অর্থ ব্যয় করতে পারছি না। তবে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে বিমানবাহিনীকে আরো যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনীর মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট উপভোগ করেন। এ সময় তাকে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ৭৭তম বাফা কোর্স এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি-২০২০ কোর্স সম্পন্নকারীদের মাঝে ফ্লাইং ব্যাজ, ট্রফি এবং অন্যান্য পুরস্কার বিতরণ করেন।
আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অফিসার ক্যাডেট শাকিল আহমেদ ৭৭তম বাফা কোর্সে সেরা চৌকস কৃতিত্বের জন্য ‘সোর্ড অব অনার’ এবং অফিসার ক্যাডেট সাইফ আল সাফাত উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ট্রফি’ লাভ করেন। ৭৭তম বাফা কোর্স (গ্রাউন্ড ব্রাঞ্চ) এ সেরা কৃতিত্বের জন্য অফিসার ক্যাডেট শাশ্বত সরকার দীপ ‘বিমান বাহিনী প্রধানের ট্রফি’ লাভ করেন। অফিসার ক্যাডেট মেহেদী হাসান তুষার জেনারেল সার্ভিস প্রশিক্ষণ কৃতিত্বের জন্য ‘কমান্ড্যান্টস ট্রফি’ লাভ করেন। ২ নম্বর স্কোয়াড্রন চ্যাম্পিয়ন বিবেচিত হয়ে একাডেমি পতাকা লাভ করে।
এবারে ২০ জন মহিলা অফিসার ক্যাডেটসহ মোট ৬৭ জন অফিসার ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। অফিসার ক্যাডেট একাডেমি আন্ডার অফিসার মো: নাজমুল ইসলাম দীপন আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব প্রদান করেন। কুচকাওয়াজ শেষে বিমান বাহিনী একাডেমির বিভিন্ন প্রকার বিমানের আকর্ষণীয় ফ্লাইপাস্ট অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যান্যের মধ্যে উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিভাবকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।