মুহা. রুহুল আমিন।
লাল সবুজের পতাকা থেকে ৪৯ তম বিজয়ের মাসটি বিদায় নিচ্ছে। আজ তাই স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ উৎসর্গকারী সকলের জন্য রইলো অন্তরের অন্তস্তল থেকে শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা।
বিজয় অর্জনের সেই গৌরবময় দিনটি আমরা দেখেনি, দেখিনি মানচিত্রের জন্ম দিন, কিন্তু ইতিহাস আমাদের জানিয়েছে সে অনুপ্রেরনার কাহিনী ।
কবির ভাষায়-
বিজয় তুমি লাখ শহীদের রক্তভেজা দান,
বিজয় তুমি লাখ বাঙালির মুক্তিকামী প্রাণ।
এ বিজয় এক মহান বিজয় রক্তের দামে কেনা,,
বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন মানচিত্র আমরা পেয়েছি। কিন্তু ৪৯ বছর পরও প্রকৃত অর্থে জাতি বিজয়ের সুফল ভোগ করতে পারেনি। স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, যা আজো স্বপ্নই রয়ে গেছে। আজ প্রমাণ হয়েছে নৈতিকতার সমন্বয়ে গড়ে ওঠা আদর্শ চরিত্রবান যোগ্যতাসম্পন্ন দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব ছাড়া জাতির কাঙ্খিত কল্যাণ সম্ভব নয়।
প্রকৃত বিজয়ের সুসংবাদ আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন এভাবে-
وَاُخۡرٰی تُحِبُّوۡنَہَا ؕ نَصۡرٌ مِّنَ اللّٰہِ وَفَتۡحٌ قَرِیۡبٌ ؕ وَبَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
(আস সাফ – ১৩)
এবং আরও একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তোমরা পছন্দ কর। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়। মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ দান করুন।
আজ তাই বলবো রাসূল (স:) এর অঙ্কিত সোনার মদিনার আলোকে যেদিন সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, এ জাতি সেদিন প্রকৃত বিজয়ের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে।
আমাদের এ প্রিয় জন্মভূমি পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক ও জনসম্পদে ভরপুর, এদেশের উন্নয়নের জন্য ৪৯টি বছর কম ছিলনা। কিন্তু এখনো দেশের অগ্রযাত্রার অবস্থা হতাশাজনক। অথচ বাংলাদেশের সমসাময়িক যেসব দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে তার বেশির ভাগই আজ সমৃদ্ধ দেশের তালিকায় নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে।
কিন্তু দূর্ভাগ্য আমাদের। আজ উল্টো চিত্র দেখতে হচ্ছে জাতিকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা বীরোচিত ভূমিকা রেখেছেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাদের স্বপ্ন আমরা পূরণ করতে পারিনি।
মহান বিজয়ের চেতনা হওয়ার কথা ছিল এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। কিন্তু আজ দু:খজনকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে স্বার্থ হাসিলের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জাতির গৌরবের মুক্তিযুদ্ধকে দলীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণতি করা হয়েছে। যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সেই মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করেই জাতিকে বিভক্ত করে ফেলা হয়েছে। যারা আজ নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের একচ্ছত্র দাবীদার মনে করে তাদের দ্বারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুন্ঠিত হচ্ছে বারবার।
হে তরুণ যুবকেরা, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নপূরণে, প্রিয় জন্মভূমি কে পৃথিবীর মানচিত্রে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে, জাতিকে বিজয়ের প্রকৃত স্বাদ দিতে, আসুন হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাব আমরা।
কবির ভাষায়-
তারুণ্য আর রবেনা বসে অকারণ
রুখিবে ষড়যন্ত্র আর বাধা যত আমরণ
আসুন! বিজয়কে অর্থবহ করতে এবং একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করি।
“দেবোনা হারাতে কখোনো মোরা
তোমার পতাকার সম্মান
সাহস নিয়ে দাড়িয়ে আছি
অজস্র দেখো বীর সন্তান”
৫৬ হাজার বর্গমাইলকে সত্যিকারার্থে মুক্ত করব আমরা, বিজয়ের স্বাদ জাতির সকলে উপভোগ করবেই করবে ইনশাআল্লাহ।