রাজধানীতে গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা সরকারের এজেন্টদের পুরোনো খেলা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে দলের পাঁচজন নেতাকে সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে গেছেন। এক দশক ধরে এই গুমের সংস্কৃতি দিয়ে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে উত্তরার বাসা থেকে এক জরুরি ভার্চ্যুয়ালি সংবাদ সম্মেলন করে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন। তাঁরা হচ্ছেন লিয়ন হক, মামুন পারভেজ তন্ময়, তৌহিদুল ইসলাম হাসিব, ফেরদৌস মজুমদার মাসুম ও সেলিম মিয়া। এই পাঁচজনকে তুলে নিয়ে গেছেন সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা, অনেক জায়গায় পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। দল ও তাঁদের পরিবার থেকে খোঁজ করা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অস্বীকার করছে যে তারা এই সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না। যাঁরা গুম হয়েছেন, তাঁদের পরিবার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন অবস্থায় আছে, আমরাও উদ্বিগ্ন অবস্থায় আছি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি নিখোঁজ হন, তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারের। বিশেষ করে এটা একটা অসম্ভব ব্যাপার যে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়েছেন, তারপরে সাদাপোশাকধারী গোয়েন্দারা তাঁকে তুলে নিয়ে যাবেন। এ কোন দেশে বাস করছি আমরা?’
সরকারের অপকর্মের সমালোচনা রুখতেই বিরোধীদের গুম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজকে বাস্তবতা হচ্ছে, এই সরকার শুধু জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েনি, তারা পুরোপুরিভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। সে কারণে তারা গুমের সংস্কৃতি চালু রেখে ভয় দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণের ওপর নির্যাতন করছে। উদ্দেশ্য একটাই, সরকারের যে বিভিন্ন অপকর্ম রয়েছে, সেই অপকর্মগুলোর যাতে সমালোচনা না করা যায়। তারা রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে, সেভাবেই তারা টিকে থাকতে চায়।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে রাজনীতি করার জন্য যদি মানুষকে গুম হয়ে যেতে হয়, ভিন্নমত পোষণ করার জন্য যদি গুম হতে হয়, তাহলে এ দেশে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। বাস্তবতা হচ্ছে, এ দেশে কোনো নির্বাচনই হয় না। এখন নির্বাচনব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে গেছে। জনগণের কোনো আস্থা নির্বাচনের প্রতি নেই। এটা হয়েছে সরকারের কারণে।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার নীলনকশা এবং ক্ষমতাসীনদের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার চক্রান্তের বিরুদ্ধে দলমত–নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম করার আহ্বান জানান।